top of page

পুত্রদা একাদশীর মাহাত্ম্য!

যুধিষ্ঠির মহারাজ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। এই একাদশী 'পুত্রদা' নামে প্রসিদ্ধ। সর্বপাপবিনাশিনী ও কামদা এই একাদশীর অধিষ্ঠাতা দেবতা হলেন সিদ্ধিদাতা নারায়ণ। ভদ্রাবতী পুরীতে সুকেতুমান নামে এক রাজা ছিলেন। তার রানীর নাম ছিল শৈব্যা। রাজদম্পতি বেশ সুখেই দিনযাপন করছিলেন। বংশরক্ষার জন্য বহুদিন ধরে ধর্ম-কর্মের অনুষ্ঠান করেও যখন পুত্রলাভ হল না, তখন রাজা দুশ্চিন্তায় কাতর হয়ে পড়লেন।


তিনি ভাবতেন, পুত্রহীনের জন্ম বৃথা ও গৃহশূন্য, তাদের পিতৃঋণ শোধের কোন উপায় নেই। তাই তিনি আত্মহত্যার কথা চিন্তা করলেও এরপর ভাবলেন আত্মহত্যা মহাপাপ। তারপর একদিন রাজা নিবিড় বনে গমন করলেন। বনভ্রমণ করতে করতে দ্বিপ্রহর অতিক্রান্ত হলে রাজা ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর হলেন। তিনি চক্রবাক, রাজহংস এবং নানারকম মাছে পরিপূর্ণ একটি মনোরম সরোবর দেখতে পেলেন।


সরোবরের কাছে মুনিদের একটি আশ্রম ছিল। সরোবর তীরে বেদপাঠরত মুনিগণ ছিলেন। মুনিগণ রাজার প্রতি প্রসন্ন হয়ে তাদের সেই স্থানে আসার কারণ ও পুত্রদা একাদশীর কথা জানালেন। মুনিদের কথা শোনার পর যথাবিধানে রাজা কেবল ফলমূলাদি আহার করে সেই ব্রত অনুষ্ঠান করলেন।


দ্বাদশী দিনে উপযুক্ত সময়ে শস্যাদি সহকারে পারণ করলেন। মুনিদের প্রণাম নিবেদন করে নিজগৃহে ফিরে এলেন। ব্রতপ্রভাবে রাজার যথাসময়ে একটি তেজস্বী পুত্র লাভ হল। এই ব্রত সকলেরই পালন করা কর্তব্য। নিষ্ঠাসহকারে যারা এই পুত্রদা একাদশী ব্রত পালন করবে, তারা 'পুত' নামক নরক থেকে পরিত্রাণ লাভ করবে। এই ব্রতকথা শ্রবণ কীর্তনে অগ্নিষ্টোম যজ্ঞের ফল পাওয়া যায়। ত্রিলোকে এর মতো শ্রেষ্ঠ ব্ৰত নেই। এই ব্রতকারীকে নারায়ণ বিদ্বান ও যশস্বী করে তোলেন।

186 views0 comments

Recent Posts

See All

পদ্মিনি একাদশী মাহাত্ম্য

স্মার্তগণ পুরুষোত্তম মাস বা অধিমাসকে ‘মলমাস’ বলে এই মাসে সমস্ত শুভকার্য পরিত্যাগ করে থাকেন। কিন্তু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই মাসকে পারমার্থিক...

জয়পতাকা স্বামী মহারাজের জীবনী

ওঁ বিষ্ণুপাদ পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য অষ্টোত্তরশত শ্রীশ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী ১৯৪৯ খ্রীষ্টাব্দের ৯ই এপ্রিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের উইসকন্সিন...

Comments


bottom of page